IQNA

যুদ্ধ ছাড়াই বছরে ১,৬০০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু

13:37 - December 04, 2017
সংবাদ: 2604473
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোনো যুদ্ধ বা সংঘর্ষ ছাড়াই প্রতিবছর ভারতের সেনাবাহিনীতে (স্থল, বায়ু ও নৌ) অন্তত ১,৬০০ জওয়ানের মৃত্যু হয়। আত্মহত্যা ও সড়ক দুর্ঘটনার কারণেই এমনটা ঘটছে।

যুদ্ধ ছাড়াই বছরে ১,৬০০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু
 

বার্তা সংস্থা ইকনা: সর্বভারতীয় ইংরাজি দৈনিকের রিপোর্ট, দুর্ঘটনায় স্থল, বায়ু ও নৌ সেনার অন্তত ৩৫০ জনের মৃত্যু হয়। ১২০ জন আত্মহত্যা করেছেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন দুর্ঘটনা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণেও বেড়েছে মৃত্যু হার। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৪ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত বিমান বাহিনী হারিয়েছে ৬,৫০০ কর্মীকে।

পদস্থ কর্তারা মেনে নিয়েছেন, জওয়ানরা মানসিক বিপর্যস্ত থাকে, সেই কারণেই বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবনতা। এটি রুখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হলেও আত্মহত্যা এড়ানো যাচ্ছে না। প্রতি ৩ দিনে একজন ভারতীয় সেনা আত্মহত্যা করে

দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে দায়িত্বপালনকারী সৈনিক নরেন্দ্র আর-এর লাশ সোমবার রাতে বাঙ্গালুরু শহরে এসে পৌছে। নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন এই সৈনিক। এই আত্মহত্যার ঘটনায় তার পরিবারের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডে যোগ হবে – আরেকজন সৈনিক আত্মহত্যা করেছেন।

২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন শাখা – আর্মি, নেভি ও এয়ার- মিলিয়ে প্রতি তিন দিনে গড়ে একজন সেনা আত্মহত্যা করেছেন। তবে, এদের বেশিরভাগ সেনাবাহিনীর সদস্য।

উল্লেখিত ১,১৮৫ দিনে দায়িত্বরত ৩৪৮ জন ভারতীয় সেনা আত্মহত্যা করে। বিশেষ করে সন্ত্রাস ও বিদ্রোহ কবলিত জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে যারা দীর্ঘ সময় মোতায়েন থাকে তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি।

তবে, এসব আত্মহত্যার পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কারণ জড়িত থাকে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করে। বিশেষ করে বাড়িতে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে কর্মস্থলে গিয়ে সেনারা আত্মহত্যা করে। উর্দিধারি ব্যক্তি বা তার পরিবারের ক্ষোভগুলো নিরসনের ব্যাপারে বেসামরিক কর্তৃপক্ষ তেমন গুরুত্ব দেয় না বা উদাসীন থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে বহু মেয়াদ দায়িত্বপালনকারী এক কর্নেল এসব অভিযোগ স্বীকার করে করে বলেন, ‘এসব ঘাঁটিতে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনের কারণে একজন সৈনিকের মন ও শরীরের ওপর প্রবল চাপ তৈরি হয়। প্রশিক্ষণ ও জাতি সেবার চেতনা আমাদেরকে দায়িত্ব পালন করে যেতে বাধ্য করে ঠিকই, কিন্তু কখনো কখনো তা কঠিন হয়ে পড়ে।’

আরেক কর্মকর্তা বলেন, কোনো সৈনিক যদি বাড়ি থেকে সমস্যর বোঝা মাথায় নিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফিরে, তখন এসব জায়গার শ্রমসাধ্য পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়া তার জন্য আরো কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য আরো ভালো পরিবেশ তৈরির বিষয়টি তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। পাশাপাশি এ ধরনের মানসিক পীড়ন থেকে মুক্তি দিতে কাউন্সেলিং করার জন্য অধিক সংখ্যক কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তবে, এসব প্রচেষ্টা যথেষ্ঠ বলে মনে হয় না এখনো।

তিন বাহিনীর মধ্যে উল্লেখিত সময়ে সেনাবাহিনীতে সবচেয়ে বেশি ২৭৬ জন আত্মহত্যা করে। সবচেয়ে কম নৌ বাহিনীতে, ১২ জন।

captcha