IQNA

যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

2:14 - May 11, 2018
1
সংবাদ: 2605728
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ৩০ শে এপ্রিল যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মত একজন অভিবাসী বংশোদ্ভুত মুসলিম ব্রিটিশ নাগরিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অভিবাসী ইস্যুতে মতপার্থক্যের কারণে পূর্ববর্তী স্বারষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বর রুডের পদত্যাগের পর পাকিস্তানী অভিবাসী পিতামাতার সন্তান জনাব সাজিদ জাভেদ এই দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। নিচে তার সম্পর্কে সংক্ষেপে পাঁচটি তথ্য প্রদান করা হল।


বার্তা সংস্থা ইকনা: এক. জনাব সাজিদ জাভেদ ব্রিটেনের দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী নাগরিক। ১৯৬৯ সালে তার জন্মের পূর্বে তার পিতা মাতা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হিসেবে আগমন করেন।

দুই. রাজনীতিতে আগমনের পূর্বে জনাব জাভেদ ছিলেন একজন সফল ব্যাংকার। জার্মানীর বিখ্যাত ডয়েচ ব্যাংকের (Deutsche Bank) তিনি একজন পরিচালক ছিলেন।

তিন. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন।

চার. যুক্তরাজ্যের ‘ইইউ’ সমর্থনকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০১৬ সালের ব্রিটেন জুড়ে অনুষ্ঠিত ‘ইইউ’তে সদস্য হিসেবে অবস্থান সংক্রান্ত গণভোটে তিনি ব্রিটেনের ‘ইইউ’তে সদস্য হিসেবে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালান।

পাঁচ. ব্রিটেনের অভিবাসী ‘উইন্ডরুশ প্রজন্ম’র (Windrush generation) অধিকার রক্ষায় তিনি সর্বদাই উচ্চকন্ঠ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশসমূহ থেকে আগত আফ্রো-আমেরিকান অভিবাসীদের বংশধর বর্তমান প্রজন্মের ব্রিটিশ নাগরিক এই গোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার রক্ষায় তিনি যুক্তি প্রদান করে আসছেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার দেশে অবস্থানরত ক্যারিবিয়ান অভিবাসীদের অবতরণসংক্রান্ত যাবতীয় নথি ধ্বংস করার জন্য স্বরাষ্ট্র কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশের মানে হলো যুক্তরাজ্যে কয়েক দশক ধরে অবস্থানরত ক্যারিবিয়ানদের ব্রিটেন ছেড়ে চলে যেতে হবে। কারণ হিসেবে তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো কাগজপত্র নেই বলে উল্লেখ করা হবে। তবে যুক্তরাজ্য সরকার ক্যারিবিয়ানদের দেশ ত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ায় ক্যারিবিয়ান নেতাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন থেরেসা। এই ঘটনার জন্য রুডও ক্ষমা চেয়েছেন। ক্যারিবিয়ানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতে হাউজ অব কমন্সকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শ্রমিক ঘাটতি পূরণের উদ্দেশ্যে কমনওয়েলথ দেশগুলো থেকে যাদের ব্রিটেনে নিয়ে আসা হয়েছিল তাদের উত্তরসূরিদেরই ‘উয়িন্ডরাশ জেনারেশন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ বিষয়ে প্রশ্নের মুখে গত বুধবার ৫৪ বছর বয়সী রাড ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের বলেছিলেন, অভিবাসীদের সরানোর কোনো লক্ষ্য ব্রিটেনের নেই। কিন্তু এ ধরনের লক্ষ্য ব্রিটেনের আছে, ফাঁস হওয়া নথিতে এটি প্রকাশ পাওয়ার পর পার্লামেন্ট সদস্যরা রাডকে তার বক্তব্য স্পষ্ট করার জন্য চাপ দেন।

বিরোধী দল লেবার পার্টি বারবার রাডকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাতে থাকে। দলটি ‘উয়িন্ডরাশ’ কেলেঙ্কারীর জন্য থেরেসাকেও দায়ী করে এবং সরকারের অভিবাসন নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজের অবস্থানও ব্যাখ্যা করার দাবি জানায়। এ পরিস্থিতিতে গত বছর প্রধানমন্ত্রী থেরেসাকে লেখা রাডের একটি চিঠি রোববার প্রকাশ করে গার্ডিয়ান। এতে দেখা যায় অভিবাসীদের জোর করে বিতাড়নের প্রক্রিয়া গতিশীল করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন রাড।

অভিবাসীদের বিতাড়নের বিষয়ে নিজের বক্তব্য একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার পর রোববার প্রধানমন্ত্রী থেরেসাকে ফোন করে রাড পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার পদত্যাগের প্রস্তাবে সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন রাড।

নিজের পদত্যাগের চিঠিতে রাড বলেন, অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করতে যাদের টার্গেট করা হয়েছে তাদের বিষয়ে তার কার্যালয়কে দেয়া তথ্যের বিষয়ে সতর্ক না থাকার সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছেন তিনি। রাড আরো বলেন, নির্বাচন কমিটির কাছে হাজির হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তা আমি পুনর্বিবেচনা করেছি এবং এ বিষয়ে আমার কার্যালয়কে দেয়া তথ্যের বিষয়েও আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমার আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। এরপরও যদি কোনো ভুলত্রুটি থেকে যায় তার দায়দায়িত্ব আমার।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে রাডের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তবে তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের সময় বলেন, এটা গ্রহণ করা আমার জন্য খুবই দুঃখজনক। তবে আমি আপনার পদত্যাগের কারণ বুঝতে পারছি।  আরটিএনএন

প্রকাশিত: 1
পর্যালোচনা করা হচ্ছে: 0
প্রকাশযোগ্য নয়: 0
ottucnhg
0
0
20
captcha